এক অসাধারন মেধাবী বাঙালি বাবু আবিষ্কার করে গেছেন যে, গাছেরও প্রাণ আছে। আজ দু’দিন ধরে আমি গোবর গণেশ বাঙালি বাবুর মাথায় চিন্তা ঢুকেছে, গাছের কি মস্তিষ্ক আছে? অনলাইনে কিছু বইপত্র ঘাটলাম, সবজান্তা(!!) গুগল কে জিজ্ঞাসা করলাম। সবাই যদি কিন্তু’র মধ্যেই সীমাবদ্ধ । সবাই বলছে প্রাণ থাকলে মস্তিষ্ক থাকবেই। কিন্তু তার অবস্থান কোথায়? শিকড়ে,কান্ডে, ডালে, না পাতায়? লতানো গাছ এক একটা হাত বের করে শক্ত কিছুকে আকড়ে ধরে বেয়ে বেয়ে উপরে উঠে। শক্ত গাছ বিল্ডিং এর কার্নিশে বাধা পেলে নিজেই বাঁকা হয়ে আকাশ খুঁজে নেয়। নিজের খাবার নিজে তৈরি করে। পরাগায়ণ করে ফল ফসল ধারণ করে,বড় করে, প্রাণীকুলের খাওয়ার উপযোগী করে। বংশ বিস্তারের জন্য পৃথক পৃথক আয়োজন ব্যবস্থা করে। এই রহস্যময় কার্যক্রম গাছেরা মস্তিষ্ক ছাড়া করে, এটা হতে পারেনা। সে মস্তিষ্ক তাদের যেখানেই থাক না কেন।
শেষ পর্যন্ত আমার জ্যান্ত গুগল সহপাঠিনীকে ফোন করলাম,,,,
– এই মোটি, গাছের কি মস্তিষ্ক আছে?
* ওরে আমার মিসিং হিরো,তোর মস্তিষ্ক কি পুরোটাই যাওয়ার পথে ?
– ঠাট্টা নয়, জানলে বল।
* আমি নিশ্চিত গাছের মস্তিষ্ক আছে, রিপুও আছে, তবে একটা রিপু নাই,তা হলো ক্রোধ। মানুষের সঙ্গে গাছের অনেক পার্থক্যের মধ্যে এটা প্রধান পার্থক্য।
– কেমন ?
* যেমন ধর, লাউ এর আগা খাইলাম,ডোগা খাইলাম, লাউ-ও খাইলাম,তারপর লাউ দি বানাইলাম ডুগডুগি। অথচ, লাউগাছ নিরবে সব সহ্য করে নিলো। তুই আমি হলে কি সহ্য করতাম? করতাম না। কারণ আমরা ক্রোধ সম্পন্ন।
গম ভুট্টা ডাল আর নানা জাতের ফল ফসলের অতি উৎপাদনশীল দেশ আমেরিকা আর কানাডা। এখন চেরি ফলের মৌসুম। এই সময় খামারীরা তাদের খামারে অর্থের বিনিময়ে ক্রেতাদের চেরি ফল তুলে খেতে ও সংগ্রহ করতে দেয়। এটাকে ওরা বলে চেরি পিকিং।
শহর ছেড়ে ছুটে চললাম কানাডার একটা চেরি খামারে। সবাই চেরি তুললাম, ইচ্ছে মতো খেলাম, বাস্কেট ভরে নিলাম। চেরি গাছগুলো নিরবে অকাতরে তার সৃষ্টিকে আমাদেরকে দান করলো।
আমি তাদের চুপি চুপি বললাম, ভালো থেকো বন্ধুরা, আবার দেখা হবে।
এছাড়া আর কি বা বলার ছিলো আমার?
কারণ, গাছেরা তো আমার কাছে কৃতজ্ঞতা বা প্রতিদান পাওয়ার আশা করে না।
অথচ, আমি করি। ভিক্ষুককে দুটি টাকা দিয়ে স্বর্গ পাবার আশা।
…….পৃথিবী রহস্যময়।।
( অন্টারিও, কানাডা)